বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা ০ থেকে ৬০ বছর ও তার বেশি পর্যন্ত

সুস্থ জীবনযাপন করতে হলে আমাদের জন্ম থেকে সঠিক পুষ্টি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পুষ্টি চাহিদা বয়স অনুযায়ী পরিবর্তিত হয়। এজন্য বিভিন্ন বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা আলাদা হয়ে থাকে। আমরা এই আর্টিকেলে বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকার একটি ধারণা দেওয়া চেষ্টা করব যা প্রতিটি বয়সের পুষ্টি চাহিদা পূরণে জন্য যথাযথ হবে। তাহলে চলুন আজকের আর্টিকেল শুরু করা যাক।

শিশু ০ থেকে ৬ মাস বয়সের খাদ্য তালিকা

প্রথম ছয় মাস আপনার শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ান। কারণ শিশুর জন্য সর্বোত্তম খাবার মায়ের বুকের দুধ। ইউনিসেফ বলে জন্মের পর এক ঘন্টার মধ্যেই মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করতে। কারণ,এই সময়ে শিশুরা আগ্রহী থাকে দুধ খাওয়ার জন্য। যদিও এত অল্প সময়ের মধ্যে বুকের দুধ তৈরী হয় না। তারপরেও বুকের দুধ টানার অভ্যাস চালু রাখতে হবে। এতে করে দ্রুত বুকে দুধ চলে আসবে এবং নবজাতকের দুধ পানের অভ্যাসও তৈরি হবে।

বাজারে থাকা কোন দুধই মায়ের দুধের পুষ্টিগুণ পূরণ করতে পারে না। অথবা মায়ের দুধের সমান হয় না তাই সবসময় চেষ্টা করবেন বুকের দুধ খাওয়ানোর। তাই জন্ম থেকে প্রথম  ছয় মাস বয়স পর্যন্ত আপনার শিশুকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খেতে দেন। ছয় মাস বয়স থেকে শিশুকে বুকের দুধের পাশাপাশি নরম বা সুপ জাতীয় খাবার দেওয়া যাবে। তবে দুই বছর বা তার চেয়ে বেশি পর্যন্ত শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবে।

০ থেকে ৬ মাস শিশুর মায়েদের জন্য খাদ্য তালিকা

মায়েদের দুধের উৎপাদন ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য প্রতিদিন ২০০০-২৫০০ ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাওয়ার প্রয়োজন। এছাড়াও, মায়েদের বিভিন্ন ধরণের খাবার খাওয়া দরকার যাতে শিশু সকল প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান পেয়ে যায়। তাই আমরা এখন জানবো কোন কোন খাবার খাওয়া ভালো এবং কোন কোন খাবার না খাওয়া উচিত।

১) শস্য জাতীয় খাবার ভাত, রুটি, ওটমিল, বার্লি ইত্যাদি।

২) ডাল, মাংস, মাছ, ডিম ইত্যাদি প্রোটিনের ভালো উৎস।

৩) ফল ও শাকসবজি যা ভিটামিন, খনিজ এবং ফাইবারের জন্য ভালো উৎস।

৪) দুগ্ধজাত খাবার যেমন দুধ, দই, পনির, মাখন, কনডেন্সড এবং আইসক্রিম।

৫) স্বাস্থ্যকর চর্বি মাছ,ডার্ক চকোলেট, অলিভ অয়েল তারপরে রয়েছে বীজ জাতীয় খাদ্য যেমন বিভিন্ন ধরনের বাদাম, চিয়া বা সূর্যমুখীর বীজ।

৬) পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা।

মায়েদের জন্য কিছু খাবার না খাওয়াই ভালো

১) ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়

২) প্রক্রিয়াজাত খাবার

৩) অ্যালকোহল আছে এমন সকল খাবার থেকে বিরত থাকা।

৪) এছাড়াও যেসব খাবার স্বাস্থ্যকর নয় তা এড়িয়ে চলা উচিত।

৬ মাস থেকে ১ বছর বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা

বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা
বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা

মায়ের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দেওয়া শুরু করতে হবে। যেমন:

১) সবজি: আলু, গাজর, কুমড়া, বীট, লাউ, শসা, ব্রকলি, পালং শাক, লাল শাক, মিষ্টি আলু ইত্যাদি।

২) ফল: কলা, আপেল, নাশপাতি, পেঁপে, আম, মাল্টা, পেয়ারা ইত্যাদি।

৩) মাংস: মুরগির মাংস, খাসির মাংস, গরুর মাংস, মাছ ইত্যাদি।

৪) ডাল: মসুর ডাল, মুগ ডাল, ছোলা ডাল, কলাই ডাল ইত্যাদি।

৫) শস্য: ভাত, চাল, গম, ওটস, জাউ ইত্যাদি।

৬) ডিম: সপ্তাহে ২-৩ টি ডিমের কুসুম।

৭) দুগ্ধজাত খাবার দুধ, দই, ছানা, মাখন এবং চিজ ইত্যাদি।

কিভাবে খাবার তৈরি করবেন

১) সবজি এবং ফল ভালো করে ধুয়ে নিন যাতে সবজি জীবাণুমুক্ত হয় এবং সেদ্ধ করে এরপর মসৃণ করে পিষে বা ব্লেন্ড করে শিশুকে খাওয়ান।

২) মাংস হাড় ছাড়িয়ে ভালো করে ধুয়ে সেদ্ধ করে নিন। এরপর মসৃণ করে পিষে বা ব্লেন্ড করে শিশুকে খাওয়ান।

৩) ডাল জাতীয় শস্য ভালো করে ধুয়ে সেদ্ধ করে নিন। এরপর মসৃণ করে পিষে বা ব্লেন্ড করে শিশুকে খাওয়ান।

৫) বিভিন্ন মুরগি এবং হাঁসের ডিম রয়েছে। ডিম সেদ্ধ করে কুসুম আপনার শিশুকে খাওয়ান।

৬) দুগ্ধজাত খাবার দুধ, দই, ছানা, মাখন সরাসরি শিশুকে খাওয়ান।

শৈশব ১ থেকে ৫ বছর

এ সময় শিশুদের দ্রুত দৈহিক পরিবর্তন ঘটে। যেমন, ওজন এবং উচ্চতা বৃদ্ধি পায়, হাড় শক্ত হয়, দাঁত ওঠা ইত্যাদি। এছাড়াও বিভিন্ন রকমের শারীরিক পরিশ্রম করে। যেমন দৌড়ানো, লাফালাফি, সিঁড়িতে ওঠা এবং বল ছুড়তে পারা ইত্যাদি। তাই এ সময় প্রত্যেক মায়ের উচিত তার সন্তানের খাবারের প্রতি অধিক মনোযোগি হওয়া।

১) শস্য জাতীয় খাবার ভাত, গমের রুটি, পাউরুটি, ভুট্টা এবং আলু ভর্তা। দেহের প্রয়োজনীয় ক্যালরির অর্ধেকেরও বেশি এই শস্য জাতীয় খাদ্য থেকে পাওয়া যায়। 

২) শাকসবজির মধ্যে রয়েছে পালং শাক, লাউ শাক, কচু পাতা, গাজর, মটরশুঁটি, ব্রকলি, শসা, টমেটো ইত্যাদি।

৩) এই সময় সন্তানের ফলমূল খাওয়া দরকার। বিভিন্ন ধরনের ফল রয়েছে যেমন আপেল, কলা, পেঁপে, আম, জাম্বুরা, পেয়ারা, লেবু।

৪) সপ্তাহে ২-৩ বার মুরগির মাংস, গরুর মাংস, মাছ ইত্যাদি মাংস জাতীয় খাবার খাওয়ান।

৫) খাবারে অর্গানিক তেল ব্যবহার করে রাধুন যেমন জলপাই তেল, সয়াবিন তেল, সূর্যমুখী তেল সীমিত পরিমাণে দিয়ে রান্না করে খাওয়ান।

৬) মায়ের বুকের দুধ যতক্ষণ সম্ভব খাওয়ান ২ বছর বা তার বেশি।

৭) ১২ মাস বয়স থেকে গরুর দুধ খাওয়ানো শুরু করা যেতে পারে।

৮) অন্যান্য দুধ খাওয়াতে পারেন যেমন, ছাগলের দুধ এক বছর বয়সের পর। তবে এই সকল দুধ খাওয়ানের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ান।

কৈশোর ৬ থেকে ১২ বছর

পুষ্টিকর খাবার
পুষ্টিকর খাবার

শিশুরা সাধারণত ১০ বছর বয়সের মধ্যে তাদের প্রাপ্তবয়স্ক উচ্চতার প্রায় ৬০% পৌঁছে যায়। এ সময় শিশুরা পাতলা থেকে মাঝারি শরীরের গঠনে পৌঁছে এবং তার বিকাশ ঘটে। পেশীগুলি শক্তিশালী হতে শুরু করে এবং চর্বি হ্রাস পায়।

এই বয়সে শিশুরা স্কুলে যেতে শুরু করে এবং তাদের শারীরিক কার্যকলাপ বৃদ্ধি পায়। তাদের দেহে এসময় প্রচুর পুষ্টির প্রয়োজন হয়। শিশুদের দিনে ৩-৫ বার খাবার খাওয়া দরকার হয়। এই সময়ে শিশুদের খাদ্য তালিকায় বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাদ্য রাখতে হয় । যেমন:

১) প্রোটিন: ডিম, মুরগির মাংস, মাছ, ডাল।

২) শস্য: ব্রাউন রাইস, চাউল, ওটস।

৩) ফল ও সবজি: বিভিন্ন রঙের ফলমুল এবং শাকসবজি।

৪) দুগ্ধজাত খাবার: প্রতিদিন এক থেকে দুই গ্লাস দুধ খাওয়া উচিত। এছাড়াও বিভিন্ন দুগ্ধজাত খাবার খাওয়াতে হবে যেমন দই, ছানা, মাখন এবং চিজ ইত্যাদি।

৫) স্ন্যাকস: স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস যেমন, বাদাম, ফল।

১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী

১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের দ্রুত বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য বিভিন্ন ধরণের পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার প্রয়োজন। তাদের খাদ্যতালিকায় প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন এবং খনিজ সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ কিছু খাবার:

১) কার্বোহাইড্রেট: পূর্ণ শস্যের রুটি, পাস্তা, ব্রাউন রাইস।

২) শাকসবজি: পালং শাক, লাল শাক, মিষ্টি কুমড়া, শসা, গাজর, ব্রকলি, ফুলকপি, বীট ইত্যাদি।

৩) ফল: আম, কলা, কাঁঠাল, জাম্বুরা, লেবু, কমলা, আপেল, আঙ্গুর, পেঁপে, পেয়ারা ইত্যাদি।

৪) শস্য: ভাত, চালের রুটি, আটা রুটি, মুড়ি, চিড়া, ওটমিল, কর্নফ্লেক্স ইত্যাদি।

৫) ডাল: মসুর ডাল, মুগ ডাল, চন ডাল, কলাই ডাল, অড়হর ডাল ইত্যাদি।

৬) মাছ: রুই, কাতলা, বোয়াল, চিংড়ি, তেলাপিয়া, ইলিশ, পুঁটি ইত্যাদি।

৭) মাংস: গরুর মাংস, খাসির মাংস, মুরগির মাংস, হাঁসের মাংস, ব্রয়লার ইত্যাদি।

৮) ডিম: সপ্তাহে ৩-৪ টি ডিম খাওয়া উচিত।

৯) দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার: দুধ, দই, ছানা, পনির, মাখন ইত্যাদি।

১০) বাদাম ও বীজ: কাজুবাদাম, পেস্তা বাদাম, চিনাবাদাম, আখরোট, সূর্যমুখী বীজ, তিল ইত্যাদি।

১১) প্রতিদিন ৩ বার খাবার খাওয়া এবং দুই বার নাস্তা করা।

১২) পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা।

১৩) চর্বিযুক্ত, মিষ্টি এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার না খাওয়া।

১৪) নিয়মিত ব্যায়াম করা।

১৫) অতিরিক্ত খাওয়া বা কম খাওয়া উচিত নয়।

১৬) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।

১৭) প্রোটিন: মাংস, মাছ, ডাল, বাদাম।

১৯-৫৯ বছর বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা

বছর বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা
বছর বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা

একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক ক্যালরির চাহিদা তার বয়স, লিঙ্গ, শারীরিক কার্যকলাপ এবং স্বাস্থ্যের অবস্থার উপর নির্ভর করে। সাধারণত, ১৯ থেকে ৫০বছর বয়সী পুরুষদের জন্য প্রতিদিন ২৫০০ থেকে ৩০০০ ক্যালরি এবং মহিলাদের জন্য ২০০০ থেকে ২৫০০ ক্যালরি প্রয়োজন। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের বেশি ক্যালরি প্রয়োজন।

১) কার্বোহাইড্রেট শরীরের প্রধান শক্তির উৎস। প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক ন্যূনতম ৫৫% কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করার জন্য বলে।

২) প্রোটিন দেহের টিস্যু তৈরি এবং মেরামত করার জন্য প্রয়োজনীয়। প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ৫২-৬৫ গ্রাম প্রোটিন দরকার হতে পারে। কিন্তু, প্রোটিন গ্রহণের একটি হিসাব আছে। প্রতি কেজিতে ০.৮ থেকে ১ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করতে হবে। অর্থাৎ, কারো ওজন যদি ৬৫ কেজি হয় তাহলে তার প্রতিদিন ৫২-৬৫ গ্রাম প্রোটিন দরকার হতে পারে।

৩) চর্বি শরীরে শক্তি জমা করে, হরমোন উৎপন্ন করে এবং অঙ্গগুলিকে রক্ষা করে। প্রাপ্তবয়স্কদের দৈনিক প্রায় ৫০ গ্রাম চর্বি গ্রহণ করা উচিত।

৪) ভিটামিন এবং খনিজ শরীরে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। তাই আমাদের উচিত ভিন্ন ধরনের ভিটামিন এবং খনিজ গ্রহণ করা।

৫) প্রোটিন জাতীয় খাবার খান যেমন মাছ, মাংস, ডিম, ডাল, বাদাম।

৬) ক্যালসিয়াম জাতীয় খাবার যেমন দুধ, দই, পনির, সবুজ শাকসবজি।

৭) আয়রন জাতীয় খাবার যেমন মাংস, ডাল, শুকনো ফল, সবুজ শাকসবজি।

১০) ভিটামিন এ পর্যাপ্ত পরিমাণে গ্রহণ করুন। যেমন গাজর, শাকপাতা, লাল মাংস ইত্যাদি।

১১) ভিটামিন সি কমলালেবু, আঙ্গুর, স্ট্রবেরি ইত্যাদি গ্রহণ করুন।

১২) ভিটামিন ডি প্রতিদিন সূর্যের আলো গায়ে লাগান। এবং খাবার হিসেবে মাছের তেল, ডিমের কুসুম গ্রহণ করুন।

১৩) দুগ্ধজাত খাবার যেমন কম ফ্যাটের দুধ, দই।

বয়স্ক ৬০ বছর ও তার বেশি

এই বয়সে মানুষের শারীরিক কার্যকলাপ কমে যায় এবং তাদের বিপাক কমে যায়। তাই তাদের খাবারে নিম্নোক্ত খাবার রাখা জরুরি।

১) প্রোটিন যেমন মাছ, মুরগির মাংস, ডাল, বাদাম।

২) শস্য জাতীয় খাবারের মধ্যে রুটি, ব্রাউন রাইস।

৩) ফল ও সবজি।

৪) দুগ্ধজাত খাবার যেমন কম ফ্যাটের দুধ, দই।

৫) ফাইবার ওটমিল, বাদাম, সবুজ শাক-সবজি।

বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা সম্পর্কে প্রশ্ন উত্তর

১) শিশুদের প্রথম ছয় মাসে কোন খাবার দেওয়া উচিত?
উত্তর: প্রথম ছয় মাসে শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। এতে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান থাকে যা শিশুর জন্য অপরিহার্য।

২) ০-৬ মাস বয়সী শিশুর মায়েদের কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত?
উত্তর: মায়েদের প্রতিদিন ২০০০-২৫০০ ক্যালোরি যুক্ত খাবার খাওয়া উচিত, যাতে শিশুকে পর্যাপ্ত পুষ্টি দেওয়া যায়। শস্য, প্রোটিন, ফল, শাকসবজি, এবং দুগ্ধজাত খাবার মায়েদের জন্য উপকারী।

৩) কোন খাবারগুলো মায়েদের খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত?
উত্তর: মায়েদের ক্যাফেইনযুক্ত পানীয়, প্রক্রিয়াজাত খাবার, এবং অ্যালকোহলযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত।

৪) ৬ মাস থেকে ১ বছর বয়সী শিশুর জন্য কি ধরনের খাবার প্রয়োজন?
উত্তর: ৬ মাস বয়স থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি নরম খাবার যেমন সবজি, ফল, মাংস, ডাল, শস্য, এবং ডিমের কুসুম খাওয়ানো উচিত।

৫) ১-৫ বছর বয়সী শিশুদের খাদ্য তালিকায় কি থাকা উচিত?
উত্তর: এই সময়ে শিশুদের শস্য, শাকসবজি, ফল, মাংস, এবং দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ানো উচিত, যা তাদের শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশে সহায়তা করবে।

৬) কৈশোরের বয়সে (৬-১২ বছর) কি ধরনের খাবার প্রয়োজন?
উত্তর: কৈশোরের বয়সে প্রোটিন, শস্য, ফল, সবজি, এবং দুগ্ধজাত খাবার বেশি করে খাওয়ানো উচিত।

৭) ১৩-১৮ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের জন্য কোন পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাবারগুলো গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: এই বয়সে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, শাকসবজি, ফল, শস্য, ডাল, মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, বাদাম, এবং বীজ জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত।

৮) ১৯-৫৯ বছর বয়সী প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন কত ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত?
উত্তর: পুরুষদের জন্য ২৫০০-৩০০০ ক্যালোরি এবং মহিলাদের জন্য ২০০০-২৫০০ ক্যালোরি গ্রহণ করা উচিত।

৯) প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সঠিক প্রোটিনের পরিমাণ কত হওয়া উচিত?
উত্তর: প্রাপ্তবয়স্কদের প্রতিদিন ৫২-৬৫ গ্রাম প্রোটিন গ্রহণ করা উচিত। এটি নির্ভর করে তাদের ওজনের ওপর, যেখানে প্রতি কেজিতে ০.৮ থেকে ১ গ্রাম প্রোটিন প্রয়োজন।

১০) বয়স্কদের (৬০ বছর ও তার বেশি) জন্য কি ধরনের খাবার জরুরি?
উত্তর: বয়স্কদের জন্য প্রোটিন, শস্য, ফল, সবজি, দুগ্ধজাত খাবার, এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার জরুরি।

১১) শৈশবে (১-৫ বছর) কেন সঠিক খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: শৈশবে শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশের জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস গুরুত্বপূর্ণ, যা তাদের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি সরবরাহ করে।

১২) কৈশোরে (১৩-১৮ বছর) অতিরিক্ত খাওয়া বা কম খাওয়া কি ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে?
উত্তর: অতিরিক্ত খাওয়া বা কম খাওয়া কিশোর-কিশোরীদের ওজন নিয়ন্ত্রণে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে এবং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।

১৩) প্রাপ্তবয়স্কদের (১৯-৫৯ বছর) জন্য ভিটামিন ডি কতটা গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: প্রাপ্তবয়স্কদের হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভিটামিন ডি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

১৪) বয়স্কদের (৬০ বছর ও তার বেশি) বিপাক কমে গেলে কি ধরনের খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা উচিত?
উত্তর: বয়স্কদের বিপাক কমে গেলে প্রোটিন, শস্য, ফল, সবজি, এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্যাভ্যাস বজায় রাখা উচিত।

১৫) সঠিক পুষ্টি ও খাদ্যাভ্যাস কেন গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: সঠিক পুষ্টি ও খাদ্যাভ্যাস আমাদের শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে সহায়তা করে, যা সুস্থ ও সবল থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উপসংহার

সঠিক পুষ্টি এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাস প্রতিটি বয়সে সুস্থ ও সবল থাকার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বয়স অনুযায়ী খাদ্য তালিকা অনুসরণ করে আমরা আমাদের শরীরের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পারি এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে পারি।

কিন্তু, আমরা অনেকেই নিজেদের সঠিক বয়স জানিনা তাই আপনি যদি চান আপনার সঠিক বয়স জানতে তাহলে এই বয়স ক্যালকুলেটর ব্যবহার করে দেখতে পারেন। এই ক্যালকুলেটরে আপনি ভিন্ন ভিন্ন ফরমেটে আপনার বয়স দেখতে পারবেন। যেমন: বছর, মাস, সপ্তাহ, দিন, ঘন্টা, মিনিট, সেকেন্ড এমনকি ন্যানোসেকেন্ডেও বয়স জানতে পারবেন।

আপনার কাছে যদি আজকের আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করে জানান। আর এরকম নতুন নতুন আর্টিকেল পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। সবাই ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ!

Leave a Comment